প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি পুঁজিবাজারে জরুরি সহায়তা চেয়ে

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আর্থিক খাতে ফিরতে শুরু করেছে আশার আলো নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। ব্যাংক খাতে তারল্য বৃদ্ধি, রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করে দায় পরিশোধ, তৈরি পোশাক খাতে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সার্বিক অর্থনীতিতে উন্নতির ছাপ দেখা গেছে।

আলোচ্য সময়ে, অর্থনীতিদের এতোসব পরিবর্তনের মাঝেও দেশের ঘুনে ধরা পুঁজিবাজারে এখনো অস্থিরতা বিরাজমান। দীর্ঘদিনের টানা দরপতনে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা অবস্থায় পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। বিশিষ্ট ব্যাংক খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে বিএসইসি পুঁজিবাজারের গতি ফেরাতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কোনভাবে শেয়ারবাজারে গতি ফেরানো যাচ্ছে না। পুঁজিবাজারের গতি ফেরাতে এবার পুঁজিবাজারে তারল্য সহায়তা চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বারস্ত হলেন হৃদয় আকবর রেমি নামের এক বিনিয়োগকারী।

গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য ৬টি সমাধানের কথা উল্লেখ করে এই বিনিয়োগকারীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। এদিকে চিঠিতে হৃদয় আকবর রেমি বলেছেন, দেশে গত কয়েক মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। চলতি মাসে বৈদেশিক রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ড স্পর্শ করার সম্ভবনা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে অর্থপাচার বন্ধ হয়েছে এবং বিদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। একইসময়ে পোশাক খাতের সুদিনসহ ভালো সময়ে ফিরেছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। অর্থনৈতিক সূচকের উন্নতির দিনে পুঁজিবাজার এবং অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পিছিয়ে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এছাড়াও পুঁজিবাজারে চিঠিতে এই বিনিয়োগকারী বলেন, আইসিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন যে তাদের তহবিল নেই এবং চা পান ছাড়া তার কোন কাজ নেই। সুতরাং, আইসিবিকে বাজারকে সমর্থন করার জন্য সরকারের কাছ থেকে জরুরি ভিত্তিতে তহবিল পাওয়া উচিত। ঋণ প্রক্রিয়াকরণের জন্য কোনো সময়সীমা দেখানো উচিত নয়। এছাড়া তারল্য বেশি থাকা সোনালী ব্যাংকসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, পুঁজিবাজারের প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের সীমা যাচাই করে নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিনিয়োগ করতে বাধ্য করতে হবে। এছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩০ শতাংশ পরিচালকদের ধারণ করতে হবে। বিএসইসি এ আইন পালনে কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করতে পারলে বাজারে অর্থপ্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএর আইন অনুযায়ী- কোম্পানির পরিচালকদের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে বিএসইসি এ আইন পালনে বাধ্য করতে পারলেও বাজারে অর্থপ্রবাহ বাড়বে।

হৃদয় আকবর রেমি বাই ব্যাক আইন প্রণয়নের দাবি তুলেন চিঠিতে বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে শিগগিরই বাই ব্যাক আইন প্রণয়ন করা উচিত। যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম অভিহিত মূল্যের নিচে চলে যাবে, বাই ব্যাক আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলি তাদের সেসব শেয়ার কিনবে। বিশ্বের অন্যান্য শেয়ারবাজারে এই নিয়ম প্রচলিত থাকলেও বাংলাদেশে তা অনুপস্থিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button