শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ ও ডিবিএ’র বৈঠক, ডিএসই’র
সোমবার (২১ অক্টোবর) পরিচালনা পর্ষদ শীর্ষ ৩০ ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধির সঙ্গে চলমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা বৈঠকে বসেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)। বৈঠকে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
আলোচ্য সময়ে, এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই পরিচালক অধ্যাপক মেজর জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সৈয়দ হাম্মদুল করীম, মোহাম্মদ ইশহাক মিয়া, শাহনাজ সুলতানা, মোঃ শাকিল রিজভী, রিচার্ড ডি রোজারিও, ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম এবং ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাত্বিক আহমেদ শাহ।
উল্লিখিত সময়ে, শুরুতেই ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, একটি গতিশীল পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউজগুলোর দায়িত্ব অনেক বেশি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজার একটি অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছে। এ অবস্থা থেকে বাজারে কিভাবে উত্তরণ ঘটানো যায় সে বিষয়ে আপনাদের সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ জরুরি।
এছাড়াও পুঁজিবাজারে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিরা বর্তমান বাজার পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ এবং ভবিষ্যতে বাজারকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা, তারল্য সংকট, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স, মার্কেট মেকার, ক্যাটাগরি, পলিসি সাপোর্ট, নগদ উত্তোলনের সুবিধা দেওয়া, ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং সিস্টেম, ফ্লোর প্রাইস প্রয়োগ না করা, বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ, আইপিও পদ্ধতির সংস্কার, মার্জিন লোন সংস্কার, সিসি একাউন্টের ইন্টারেস্ট, সিসিবিএল, মন্দ আইপিও না আনা, লোন রেশিও, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম পর্যালোচনা এবং ক্যাপিটাল মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ড সম্পর্কে আলোচনা করেন।
ঐ সময়ে, ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, অতীতের অনেক ভুল সিদ্ধান্ত, অনিয়ম ও অদক্ষতার ফলাফল স্বরূপ পুঁজিবাজার আজ একটি দুর্বল ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য বাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এটি আমাদের জন্য একটি দুর্লভ সুযোগ পুঁজিবাজারকে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর লক্ষ্যে গড়ে তোলার। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত পরিবর্তন, অনিয়ম-দূর্নীতির তদন্ত ও বিচারের সাথে সাথে বিনিয়োগকারী এবং মধ্যস্থতাকারীদের আস্থা অর্জনে কাজ করতে হবে।
অন্যদিকে, গুরুত্বপূর্ণ গ্রহণকারী ডিবিএ এবং প্রধান ব্রোকারেজ হাউজগুলোর অংশ নেওয়া অংশ প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্সের উপর কর অব্যাহতি সুবিধা পূর্ণ:প্রতিষ্ঠা, লভ্যাংশের উপর উত্সে কর কর্তনকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করা এবং ক্যাপিটাল লসের সমন্বয় বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে ডিএসই আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সিসি একাউন্টের ইন্টারেস্ট এবং নগদ প্রদানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে ডিএসই ইতিমধ্যে আলোচনা করেছে এবং বিষয় দুইটি দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করা যায়।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পুঁজিবাজারে অতিদ্রুত বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। এজন্য তিনি বিনিয়োগকারীদের আতংকিত না হয়ে ধৈর্য্য ধারণের অনুরোধ করেন। সামষ্টিক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে। সুতরাং পুঁজিবাজারেও তার ইতিবাচক প্রভাব শীঘ্রই দেখা যাবে বলে আশা করা যায়।
তিনি আরও বলেন, ডিমিউচ্যুযালাইজেশন অ্যাক্ট ও স্কিম রিভিউ করতে হবে। এখানে সময়োপযোগী সংশোধন করতে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদকে ভূমিকা রাখতে হবে। পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউজ থেকে যে অগ্রিম আয়কর আদায় করা হয়। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউজগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, সে বিষয়েও কাজ করতে হবে।