ব্যাংকাস্যুরেন্স চালুর অনুমতি পেল পুঁজিবাজারের ছয় ব্যাংক
অনুমতি দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬ ব্যাংককে ব্যাংকাস্যুরেন্স চালুর। আলোচ্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকগুলো হলো-সিটি ব্যাংক, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ইস্টার্ণ ব্যাংক (ইবিএল) ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি)।
এদিকে ব্যাংকাস্যুরেন্স চালু করতে সিটি ব্যাংক গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্পোরেট এজেন্ট হিসেবে চুক্তি করেছে।ইস্টার্ণ ব্যাংক মেটলাইফ ও গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের সঙ্গে কর্পোরেট এজেন্ট হিসেবে চুক্তি করেছে।
এছাড়াও পুঁজিবাজারে ব্র্যাক ব্যাংক মেটলাইফ ও গ্রিন ডেল্টা, ডাচ বাংলা ব্যাংক গার্ডিয়ান ও প্রগতি লাইফের সঙ্গে, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক গার্ডিয়ান লাইফ, প্রগতি লাইফ ও গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের সঙ্গে কর্পোরেট চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রাইম ব্যাংক ন্যাশনাল লাইফের সঙ্গে কর্পোরেট চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নীতিমালা অনুসরণ করে চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো ব্যাংক বীমাসেবা বিক্রির কার্যক্রম শুরু করতে পারলেও কেউ কেউ এখনো পারেনি।
সরকার প্রায় ১০ বছর ধরে সেবাটি চালুর চেষ্টা করে আসছিল। সব ধরনের আইনি ধাপ পার করে অবশেষে গত ১ মার্চ জাতীয় বীমা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবার উদ্বোধন করেন।
ব্যাংকাস্যুরেন্সে বীমা পণ্য বিক্রির বিপরীতে ব্যাংক নির্ধারিত হারে বীমা কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন পাবে। সেবাটি তদারকির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ব্যাংকাস্যুরেন্স নামে আলাদা শাখা খোলা হয়েছে। আইডিআরএ নিজেও বীমাসংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আলাদা ইউনিট চালু করেছে।
বীমা কোম্পানিগুলো কমিশন ভাগাভাগি করে ব্যাংকের মাধ্যমে নিজেদের পণ্যের প্রসার ঘটাতে পারবে। এতে উভয় পক্ষেরই লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে। করপোরেট এজেন্ট হিসেবে বিমাপণ্য ও সেবা বিক্রি করতে চাইলে কোনো ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে। অনুমোদন পাওয়ার পর ব্যাংককে স্বতন্ত্র ব্যাংকাস্যুরেন্স ইউনিট বা উইং প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংক কোনো গ্রাহককে বিমাপণ্য গ্রহণে বাধ্য করতে পারবে না, কোনো গ্রাহককে বিমাপণ্য ক্রয়ে উৎসাহিত করার জন্য বিমা কোম্পানি ঘোষিত মূল্য ছাড়া অন্য কোনো প্রণোদনাও দিতে পারবে না। ব্যাংকাস্যুরেন্স চালু করতে আগ্রহী ব্যাংককে পরপর তিন বছর মুনাফা অর্জন করতে হবে।
একটি ব্যাংক একই সঙ্গে সর্বোচ্চ তিনটি জীবনবিমা ও তিনটি সাধারণ বিমার পণ্য-সেবা বিক্রি করতে পারবে। যেসব ব্যাংকের প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের কম, তারাই শুধু এ সেবায় যুক্ত হতে পারবে। সে ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মূলধনের বিপরীতে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের (সিআরএআর) অনুপাত হতে হবে সাড়ে ১২ শতাংশ।
অন্যদিকে, গুরুত্বপূর্ণ ব্যাসেল-৩ অংশ নেওয়া অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া ক্রেডিট রেটিং বা ঋণমানে গ্রেড-২-এর নিচে থাকা ব্যাংক বিমা ব্যবসায়ে যুক্ত হতে পারবে না। আগ্রহী ব্যাংকের ক্যামেলস রেটিংও ন্যূনতম ২ থাকতে হবে। খেলাপি ঋণের বিষয়ে বলা হয়েছে, নিট খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।